ভেরিকস ভেইনঃ অপারেশনই কি একমাত্র চিকিৎসা?
ভেরিকস ভেইন নামটা খুব চেনা না হলেও কন্ডিশনটি কিন্তু বেশ চেনা। আমাদের দেশেও এই রোগের প্রকোপ নেহাত কম নয়।
এখন জেনে নেওয়া যাক ভেরিকস ভেইন রোগটা কী ও কেন হয়।
ভেরিকস ভেইন হল রক্তনালীর একটি সাধারণ রোগ। ত্বকের নীচে জন্মানো ফোলা ও প্যাঁচানো শিরাকে ভেরিকস ভেইন বলে। এই রোগ শরীরের যেকোনও অংশেই দেখা দিতে পারে। তবে, সাধারণত পায়ে ভেরিকস ভেইন দেখা দেয়।
এর ফলে যে সব উপসর্গ দেখা যায় সেগুলি হলোঃ
– ভেরিকস ভেইন হলে শুরুতে খুব একটা ব্যথা বেদনা থাকে না। শুরুতে পা ভারি লাগে।
– পায়ের শিরা ঘন নীল বা জটলা দেখায়।
– পায়ের শিরা পাকানো দড়ির মতো হয়ে যায়, যা বাইরে থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়।
– পায়ের পাতা ফুলতে শুরু করে, জ্বালা ভাব , মাসল ক্র্যাম্প ও পায়ের ক্লান্তি দেখা দেয়।
– যে অংশে শিরা ফুলে ওঠে সেখানে চুলকানি হয়।
– পায়ের ত্বকের রঙ বদলে যায়, ত্বক শুকিয়ে পাতলা হয়ে যায়, ত্বক থেকে আঁশ ওঠে এবং ফুলে যায়।
– যত দিন যায় সমস্যা ক্রমশ বাড়তে থাকে। টানা দাঁড়িয়ে বা বসে থাকলে পায়ে ব্যথা শুরু হয়, ব্যথা বাড়ে।
– কাফ মাসল সহ পায়ের ফুলে ওঠা শিরার ব্যথা ক্রমশ বাড়তে থাকে।
– চিকিৎসার অভাবে সমস্যা বাড়তেই থাকে, পায়ে আলসার বা ঘা হয়ে যায়। আচমকা ব্লিডিং শুরু হতে পারে।
লাইফ থ্রেটেনিং নয় বলে শুরুতে অনেকেই ব্যপারটাকে সেভাবে গুরুত্ব দেন না। কিন্তু অবহেলা করলে সমস্যা বাড়ে সেকথা বলাই বাহুল্য।
কারণসমূহ :
- জন্মগতভাবেত্রুটিপূর্ণহৃদপিণ্ডথাকলে।
- অনেকক্ষণএকনাগাড়েদাঁড়িয়ে/ বসেকাজকরলে।
- পায়েরওপরপাতুলেঅনেকক্ষণবসেথাকারঅভ্যাসথাকলে।
- অতিরিক্তওজন।
- গর্ভবতীমায়েদেরএরোগহবারসম্ভাবনাবেশিথাকে।
আমাদের করনীয়ঃ
১) নিয়মিত শরীরচর্চা ও ব্যায়ামের করুন। পায়ের রক্ত চলাচলকে বৃদ্ধি করতে রোজ হাঁটুন।
২) শরীরের ওজন কমান ও খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে সচেতন হন। কম লবণযুক্ত খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস করুন।
৩) উঁচু হিলযুক্ত জুতা ব্যবহার করবেন না। সমান আকৃতির জুতো পড়ুন, যাতে কাফ মাসলের ক্রিয়াশীলতা বৃদ্ধি পায়, যা শিরার জন্য উপকারী।
৪) কোমর, পায়ে,হাতে ও কুঁচকিতে আঁটোসাঁটো কিছু পরবেন না, যাতে রক্ত চলাচলে সমস্যা দেখা না দেয়।
৫) দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকবেন না।
৬) বেশিক্ষণ পা ভাঁজ করে বসবেন।
কারণসমূহ :
- জন্মগতভাবেত্রুটিপূর্ণহৃদপিণ্ডথাকলে।
- অনেকক্ষণএকনাগাড়েদাঁড়িয়ে/ বসেকাজকরলে।
- পায়েরওপরপাতুলেঅনেকক্ষণবসেথাকারঅভ্যাসথাকলে।
- অতিরিক্তওজন।
- গর্ভবতীমায়েদেরএরোগহবারসম্ভাবনাবেশিথাকে।
ভেরিকোস ভেইন এর ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা পদ্ধতি:
— ককম্প্রেসন স্টকিংস – এটা ফোলা কমাতে সাহায্য করে এবং পায়ে মৃদু চাপসৃষ্টি করে, যেটা রক্তকে ধাক্কা দিয়ে হৃদয়ের কাছে পৌঁছে দেয় এবং রক্তের টান কম করে দেয়।
— বিভিন্ন ধরনের পজিশনইং করা যেমন শোয়ার সময় পা উঁচু রাখা।
— বিভিন্ন রকম থেরাপিওটিক এক্সারসাইজ এর মধ্যমে কিউর করা।
— ভেরিকোস ভেইন এ ইলেকট্রথেরাপির রোল আছে।যেমন-ইসপাজম বা ক্র্যাম্প মাংসপেশিকে রিলাকজিং করা,রক্ত সনচালন বাড়ানোর।
অপারেশন ছাড়াও ফিজিওথেরাপি এবং খাদ্যাভ্যাস,শরীরচর্চা মাধ্যমেও ভেরিকোস ভেইন নিরাময় করা সম্ভব।
ডা. মনিরুজ্জামান অলিভ, পিটি
প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান
অলিভ’স ফিজিওথেরাপি সেন্টার, উত্তরা
এপয়েন্টমেন্ট- ০১৯৪৬০০২৬০০